‘তিস্তা ছাড়া অন্য নদীর পানি ব্যবহার করতে পারে’

প্রকাশঃ এপ্রিল ৯, ২০১৭ সময়ঃ ৪:২৭ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১০:৩৯ অপরাহ্ণ

‘আপনাদের সমস্যা পানি, তিস্তা নয়। এ বিষয়টি সমাধানের জন্য আমি বিকল্প ব্যবস্থা নেব। এ অঞ্চলে আরো নদী রয়েছে। আমরা সেগুলোর পানি ব্যবহার করতে পারি।’

স্থানীয় সময় রোববার এ কথা বলেন মমতা। হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে। তবে কোথায় এ কথা বলেছেন, তা উল্লেখ করা হয়নি ঐ প্রতিবেদনে।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, তিস্তা নদীতে খুব কম পানি আছে, যা পশ্চিমবঙ্গের মানুষের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। এ পানি শুধুই পশ্চিমবঙ্গের। এটা কাউকে ছিনিয়ে নিতে দেবো না। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া অন্য নদীগুলোর পানি বাংলাদেশকে দিতে রাজি আছেন তিনি।

গতকাল শনিবার ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে অনুষ্ঠিত এক নৈশভোজে শেখ হাসিনার সঙ্গে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় মমতার। সেখানে মমতা বলেন, ‘বাংলাদেশ পানি পাক, আমরাও সেটা চাই। তবে তিস্তায় পানি নেই। তাই সেখান থেকে পানি বাংলাদেশে চলে গেলে আমাদের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তরবঙ্গের সমস্যা হবে। তাই বিকল্প ভাবনা ভাবা উচিত। আমি চাই, তিস্তার বদলে আলোচনা হোক তোরসা নিয়ে।’

এ ছাড়া তোরসা নদীর পাশাপাশি মানসাই, ধানসাই, ধরলার মতো নদীগুলো নিয়েও আলোচনা চেয়েছেন মমতা।

নৈশভোজ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি চাই, এ ব্যাপারে ভারত ও বাংলাদেশ দুই দেশের মধ্যে একটা গবেষণা হোক। তার থেকে কী বেরিয়ে আসে, তা দেখে নিয়ে আলোচনা হোক। ছোট ছোট নদীর ওপর ভারত ও বাংলাদেশ সরকার যৌথভাবে কাজ করলে বাংলাদেশকে পানি দেওয়া সম্ভব হবে।’

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার ভারতে আসেন, তিস্তা নিয়ে তিনি চুক্তিও চান। পানি নিয়ে সমাধান চান। পানি পাওয়ার জন্য ওনার দিক দিয়ে উদ্যোগের কোনো ত্রুটি নেই। আমিও চাই, বাংলাদেশ পানি পাক। কিন্তু তিস্তা যদি নাও দিতে পারি, তাহলে অন্য নদীর পানি নিয়ে তো আলোচনা হতেই পারে। অসুবিধা তো নেই।’

‘তা ছাড়া যেসব নদীর নাম বললাম, সেগুলো নিয়ে এখন পর্যন্ত সেভাবে কোনোদিন আলোচনাই হয়নি। চর্চা হয়নি। কেবল তিস্তা নিয়ে কথা হয়েছে। কিন্তু তিস্তার পানি এমনিতেই কম। শুকিয়ে গেছে। তারপরও যদি তিস্তার পানি শেয়ার করতে হয়, তাহলে সত্যিই তা সমস্যার। কেবল চাষবাস নয়, পানীয়জলের সমস্যাও হবে। যে কারণে বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছি। বলেছি, আলোচনা হোক তোরসা নিয়ে’, বলে পানি বিষয়ে আলোচনা এগিয়ে নিতে আন্তরিকতার কথাও জানিয়ে দেন মমতা।

এর আগে গতকাল শনিবার দুপুরে দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাদ দিয়ে তিস্তা চুক্তি সম্ভব নয়; বরং দুই দেশের সদিচ্ছার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর আন্তরিকতা যোগ হলে খুব শিগগির তিস্তাজট কাটবে। সেইসঙ্গে যোগ করেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের প্রতি তাঁর যতটা ভালোবাসা, ঠিক ততটাই ভালোবাসা রয়েছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর।

বিবৃতিতে মোদি বলেন, ‘বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এসেছেন, আমি অত্যন্ত খুশি। বাংলাদেশের প্রতি আমার যে অনুভূতি, সেই একই অনুভূতি রয়েছে মমতারও। আমার বিশ্বাস, মমতার সহযোগিতায় আমার এবং হাসিনার সরকার তিস্তা চুক্তি নিয়ে দ্রুত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’

প্রতিক্ষণ/এডি/শাআ

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

April 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
20G